পরিমাপ ও গাণিতিক গণনা
Mesurments & Mathematical Calculations
তথ্যচিত্র অংশ
বিষয়বস্তু অংশ
- পাঠ্য বিষয় : পরিমাপ ও রাশি
- পদার্থবিজ্ঞানের উদ্দেশ্য
- প্রকৃতির রহস্য উদঘাটন
- প্রকৃতির নিয়মগুলো জানা
- প্রকৃতির নিয়ম ব্যবহার করে প্রযুক্তির বিকাশ
- পদার্থবিজ্ঞারের ক্রমবিকাশ
- আদিপর্ব - গ্রিক, ভারতবর্ষ, চীন এবং মুসলিম সভ্যতার অবদান
- বিজ্ঞানের উত্থানপর্ব - ষোড়শ ও সপ্তদশ শতাব্দী
- আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের সূচনা - ঊনবিংশ শতাব্দী
- সাম্প্রতিক পদার্থবিজ্ঞান - ইলেকট্রনিক্স ও আধুনিক প্রযুক্তির আবিষ্কার
- পদার্থবিজ্ঞানের পরিসর
- ক্ল্যাসিক্যাল (বলবিজ্ঞান | তাপবিজ্ঞান | শব্দবিজ্ঞান | আলোকবিজ্ঞান | বিদ্যুৎ ও চৌম্বকবিজ্ঞান)
- আধুনিক (আপেক্ষিক তত্ত্ব | কোয়ান্টাম মেকানিক্স)
- পদার্থের পরিমাপ ও বিভিন্ন রাশি
- পরিমাপের আদর্শ একক
- মৌলিক রাশি (১.দৈর্ঘ্য ২. ভর ৩. সময় ৪. তাপমাত্রা ৫. বিদ্যুৎ প্রবাহ ৬. দীপন তীব্রতা ৭. পদার্থের পরিমাণ)
- যৌগিক রাশি (বল, বেগ, কাজ, ক্ষমতা ইত্যাদি অসংখ্য)
- বৈজ্ঞানিক প্রতীক, সংকেত এবং উপসর্গ (গুণিতক ও উপগুণিতক)
- মাত্রা ও মাত্র সমীকরণ
- পরিমাপের আদর্শ একক
- পরিমাপের যন্ত্রপাতি
- স্কেল - দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা, ব্যাস ইত্যাদি পরিমাপের যন্ত্র (ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স বা স্লাইড ক্যালিপার্স, স্ক্রু গজ)
- ব্যালান্স বা নিক্তি - ভর পরিমাপের যন্ত্র
- স্টপওয়াচ বা থামাঘড়ি -সময় পরিমাপের যন্ত্র
- পরিমাপের ত্রুটি ও নির্ভুলতা
- অনুশীলনী : পরিমাপ ও রাশি
তথ্যপ্রবাহ অংশ
- পদার্থবিজ্ঞান কী?
What is Physics?পদার্থবিজ্ঞান: বিজ্ঞানের যে শাখায় পদার্থ, শক্তি ও এ দুইয়ের মধ্যে আন্তঃক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করা হয় সেই শাখাকে পদার্থবিজ্ঞান বলে। পদার্থবিজ্ঞান হচ্ছে বিজ্ঞানের সবচেয়ে প্রাচীন ও মৌলিক শাখা।
- পদার্থবিজ্ঞানের উদ্দেশ্য
The Purpose of Physics
- প্রকৃতির রহস্য উদঘাটন
পদার্থবিজ্ঞানের মূল উদ্দেশ্য প্রকৃতির রহস্যকে জানা। প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন প্রাকৃতিক ঘটনা যেমন- লোড স্টেনের লোহাকে আকর্ষণ, উপরের দিকে নিক্ষিপ্ত বস্তুর ফিরে আসা, মৃত সাগরে মানুষের ভেসে থাকা, জ্বরের সময় রোগীর ঠাণ্ডা লাগা, আকাশ নীল দেখানো, শব্দের প্রতিধ্বনি, আকাশে বিজলী চমকানো ইত্যাদি ঘটনা কেন ঘটে, এসব প্রাকৃতিক ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা পদার্থবিজ্ঞানের মূল উদ্দেশ্য।
- প্রকৃতির নিয়মগুলো জানা
প্রাকৃতিক ঘটনার রহস্য উদঘাটন হওয়ার পর ঘটনাটি কীভাবে ঘটছে তা পর্যবেক্ষন করে তা নিয়ম বা সূত্রের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধামে সেই ঘটনা প্রমাণ করা পদার্থবিজ্ঞানের দ্বিতীয় অন্যতম উদ্দেশ্য।
- প্রযুক্তির বিকাশ
পদার্থবিজ্ঞানের তৃতীয় ও চুড়ান্ত উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রাকৃতিক ঘটনার নিয়ম বা সূত্রকে কাজে লাগিয়ে মানব কল্যানকর প্রযুক্তির বিকাশ সাধন।
- প্রকৃতির রহস্য উদঘাটন
- পদার্থবিজ্ঞানের ক্রমবিকাশ?
The Evolution of Physics
- আদিপর্ব
- গ্রিক বিজ্ঞানী থেলিস (BC 586-624) সূর্যগ্রহণের ভবিষ্যদ্বাণী করেন ও লোডস্টোনের চৌম্বক ধর্ম সম্পর্কে জানতেন।
- পিথাগোরাস (527 BC) জ্যামিতি; কম্পমান তারের উপর গবেষণা করেন ও গানের মৌলিক নোটের ধারণা দেন।
- গ্রিক দার্শনিক ডেমোক্রিটাস (460 BC) পদার্থের অবিবাজ্য কণার নাম দেন এটম যার অর্থ পরমাণু এখনোও ব্যবহৃত হয়।
- গ্রিক দার্শনিক ও বিজ্ঞানী এরিস্টটল মনে করতেন সবকিছু মাটি, পানি, বাতাস ও আগুন দিয়ে তৈরি; জীববিজ্ঞানের জনক বলা হয়।
- আরিস্তারাকস (310 BC) প্রথম সূর্যকেন্দ্রিক সৌরজগতের ধারণা দেন এবং তার অনুসারী সেলেউকাস তা যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করেন।
- গ্রিক বিজ্ঞানী আর্কিমিডিস (287 BC) তরল পদার্থর উর্ধ্বমূখী বলের ধারণা দেন; গোলীয় দর্পণ দিয়ে শত্রুর জাহাজে আগুন দেন।
- গ্রিক বিজ্ঞানী ইরাতোস্থিনিস সঠিকভাবে পৃথিবীর ব্যাসার্ধ পরিমাপ করেছিলেন।
- ভারতবর্ষের শূন্য এর আবিষ্কারক আর্যভট্ট (476), ব্রহ্মগুপ্ত ও ভাষ্কর গণিত ও জ্যোতির্বিদ্যার অনেক মূল্যবান কাজ করেন।
- আল খোয়ারিজমির (783) লেখা আল জাবির বইটি থেকে এলজেবরা অর্থাৎ বীজগণিত নামটি এসেছে।
- আল মাসুদি (896) প্রকৃতির ইতিহাস নিয়ে 30 খণ্ডে একটি এনসাইক্লোপিডিয়া লিখেছিলেন।
- ইবনে আল হাইয়াম (965) কে আলোকবিজ্ঞানের স্থাপতি বিবেচনা করা হয়।
- কবি ওমর খৈয়ম একজন উঁচুমাপের গণিতবিদ, জ্যোতির্বিদ ও দার্শনিক ছিলেন।
- চীনের বিজ্ঞানী শেন কুয়ের চুম্বক নিয়ে কাজ করেছিলেন এবং কম্পাস দিয়ে দিক নির্ধারণ করার বিষয়টি উল্লেখ করেছিলেন।
- রেনেসাঁ বা উত্থানপর্ব
- 1543 সালে কোপার্নিকাস তার একটি বইয়ে গাণিতিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে সূর্যকেন্দ্রিক সৌরজগতের বর্ণনা দেন এবং দীর্ঘদিন পর গ্যালিলিও (1564-1642) তা সবার সামনে নিয়ে আসেন। গ্যালিলিও কোনো গাণিতিক সূত্র দেওয়ার পর পরীক্ষা করে প্রমাণের মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক ধারার সূচনা করার কারণে তাকে আধুনিক বিজ্ঞানের জনক বলা হয়।
- 1687 সালে বিজ্ঞানী নিউটন বল ও গতিবিদ্যার তিনটি সূত্র ও মহাকর্ষ সূত্র প্রদান করে এর ভিত্তি তৈরি করেন। তিনি আলোর বর্ণালী নিয়ে কাজ করে কণাতত্ত্ব প্রদান করেন। নিউটন লিবনিজের সাথে মিলিতভাবে গণিতের নতুন শাখা ক্যালকুলাস আবিষ্কার করেন।
- 1778 সালে কুলম্ব স্থির বৈদ্যুতিক চার্জের সূত্র আবিষ্কার করেন। 1800 সালে ভোল্টার বৈদ্যুতিক ব্যাটারি আবিষ্কার করেন।
- 1798 সালে কাউন্ট রামফোর্ড দেখান যে, তাপ এক প্রকার শক্তি এবং একে যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত করা যায়।
- 1801 সালে ইয়ং আলোর তরঙ্গ ধর্মের প্রমাণ দেখান। দ্বি-চির পরীক্ষার মাধ্যমে আলোর অপবর্তন, ব্যতিচার ব্যাখ্যা করা যায়।
- 1820 সালে অরস্টেড তারের মধ্যে বিদ্যুৎ প্রবাহের কারনে চৌম্বক ক্রিয়ার আবিষ্কার করেন।
- 1831 সালে ফ্যারাডে ও হেনরি তারের উপর গতিশীল চৌম্বকক্ষেত্রের আবেশের মাধ্যমে ডায়নামো ও মোটর আবিষ্কার করেন।
- 1850 সালে লর্ড কেলভিন তাপগতিবিদ্যার দুটি সূত্র প্রদান করেন। তার নাম অনুযায়ী তাপমাত্রার SI একক কেলভিন।
- 1864 সালে ম্যাক্সওয়েল গতিশীল বিদ্যুৎ ও চৌম্বকক্ষেত্রের সূত্রের মাধ্যমে দেখান, আলো এক ধরনের তড়িৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গ।
- আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান
- 1803 সালে জন ডাল্টন পরমাণুকে পদার্থের ক্ষুদ্রতম মৌলিক একক হিসেবে পারমাণবিক তত্ত্ব প্রদান করেন।
- 1887 সালে মাইকেলসন ও মোরলি দেখান, ইথার বলে কিছু নেই আলো স্থির কিংবা গতিশীল সব মাধ্যমেই সমান। আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্বের মাধ্যমে এটির ব্যাখ্যা পাওয়া যায়।
- 1895 সালে রন্টজেন এক্স- রে আবিষ্কার করেন। 1896 সালে বেকরেল দেখান যে পরমাণুর কেন্দ্র থকে তেজষ্ক্রিয় বিকিরণ বের হচ্ছে। 1897 সালে থমসন পরমাণুর মধ্যে ঋণাত্মক ইলেক্ট্রনের আবিষ্কার করেন।
- 1899 সালে পিয়েরে ও মেরি কুরি তেজষ্ক্রিয় পদার্থ রেডিয়াম আবিষ্কার করেন।
- 1900 সালে ম্যাক্স প্লাঙ্ক কোয়ান্টাম তত্ত্ব প্রদান করেন। 1900-1930 সালে অনেক বিজ্ঞানী মিলে এ তত্ত্বটি প্রমাণ করেন। এ তত্ত্ব দিয়ে পরমাণুর স্থিতিশীলতা ব্যাখ্যা করা হয়।
- 1905 সালে আইনস্টাইন আপেক্ষিক তত্ত্ব বা থিওরি অব রিলেটিভিটি ও E=mc2 সূত্র প্রদান করে দেখান যে, বস্তুর ভরকে শক্তিতে রূপান্তরিত করা সম্ভব।
- 1911 সালে রাদারফোর্ড পরমাণুর কেন্দ্রে নিউক্লিয়াসে ধনাত্মক চার্জের উপস্থিতি প্রমাণ করেন।
- 1931 সালে ডিরাক কোয়ান্টাম তত্ত্বের সাথে আপেক্ষিক তত্ত্ব ব্যবহার করে প্রতি পদার্থ বা Anti Particle এর অস্তিত্ব ঘোষণা করেন যেটি পরের বছরেই আবিষ্কৃত হয়।
- 1938 সালে অটোহান ও স্ট্রেসম্যাম E=mc2 সূত্রের মাধ্যমে নিউক্লিয়াসকে ভেঙ্গে দেখান যে, নিউক্লিয়াসের ভর যেটুকু কমে গেছে সেটি শক্তি হিসেবে নির্গত হয়েছে। এর মাধ্যমেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিউক্লিয়ার বোমা ফেলে হিরোসিমা ও নাগাসাকিতে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা হয়েছিল। এই সূত্র কজে লাগিয়ে পরিবেশদূষণ না করে বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদন করা যায় এবং আমাদের দেশের রূপপুরের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র তারই একটি উদাহরণ।
- প্রফেসর সত্যেন্দ্রনাথ বসু বিকিরণ সংক্রান্ত কোয়ান্টাম সংখ্যায়ন তত্ত্বের সঠিক গাণিতিক ব্যাখ্যা দেয়ার সীকৃতিসরূপ এক ধরনের কণাকে বোজন নাম দেয়া হয়।
- সাম্প্রতিক পদার্থবিজ্ঞান
- আধুনিক ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিতে তৈরি শক্তিশালী এক্সেলেরেটরে নতুন কণা আবিষ্কার ও Standart Model ব্যবহার করে তাদের সাজানো হচ্ছে।
- যেসব কণার ভর Standart Model ব্যবহার করে ব্যাখ্যা করা যায় না তাদেরকে হিগস্ বোজন কণার মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা যায় যেটি 2013 সালে আবিষ্কৃত হয়েছে।
- 1924 সালে বিজ্ঞানী হাবল গ্যালাক্সির দূরে সরে যাওয়া থেকে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের প্রসারণ ব্যাখ্যা করেন। তার উপর ভিত্তি করে স্টিফেন হকিং দেখান যে, 14 বিলিয়ন বছর পূর্বে বিগ ব্যাঙ এর মাধ্যমে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টি হয়েছে। পদার্থবিজ্ঞনীরা দেখিয়েছেন যে, বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের দৃশ্যমান গ্রহ-নক্ষত্র-গ্যালাক্সির মাত্র 4% তারা ব্যাখ্যা করতে পারেন এবং বাকিগুলো এখনোও ডার্ক ম্যাটার ও ডার্ক এনার্জি বলে মনে করেন।
- কঠিন অবস্থার পদার্থবিজ্ঞান বা Solid State Physics এর ধারণা থেকেই অর্ধপরিবাহী; অর্ধপরিবাহী থেকেই আজকের ইলেক্ট্রনিক্সের ব্যবহৃত উপকরণ রেজিস্টর, ক্যাপাসিটর, ট্রানজিস্টর, IC, কম্পিউটার, মোবাইল; আর এসবের মাধ্যমেই বর্তমান সভ্যতার মূলভিত্তি, আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যার অন্যতম প্রধান শাখা ইলেকট্রনিক্স এর সৃষ্টি হয়েছে।
বিজ্ঞানের এই অগ্রগতি একদিনে হয়নি, শত শত বছর থেকে অসংখ্য বিজ্ঞানী এবং গবেষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে একটু একটু করে আধুনিকবিজ্ঞান বর্তমান অবস্থায় পৌঁছেছে। নিম্নে বিভিন্ন বিজ্ঞানী ও তাদের অবদানের তথ্য দেওয়া হলো।
- আদিপর্ব
- পদার্থবিজ্ঞানের পরিসর
Scope of Physics?
- চিরায়ত পদার্থবিজ্ঞান
যেমন-বল, তাপ, শব্দ, আলো, বিদ্যুৎ, চৌম্বক সম্পর্কিত বিজ্ঞান
- আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান
যেমন-কোয়ান্টাম মেকানিক্স, রিলেটিভিটি থিওরি, এটমিক এন্ড নিউক্লিয়ার, সলিড স্টেট, পার্টিকেল, কসমস সম্পর্কিত
পদার্থবিজ্ঞান বিজ্ঞানের একটি মৌলিক শাখা এবং অন্যান্য শাখাগুলো পদার্থবিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে, তাই পদার্থবিজ্ঞানের পরিসর সুবিশাল এবং গভীর। স্ট্রিং, কোয়ার্ক-এর মাধ্যমে ইলেক্ট্রন-প্রোটন-নিউট্রন তথা পরমানুর গঠন থেকে শুরু করে গ্রহ, নক্ষত্র, নীহারিকাপুঞ্জ, গ্যালাক্সিসহ এই মহাবিশ্বের গঠন ও রহস্য উদঘাটন সম্পর্কে পদার্থবিজ্ঞান আলোচনা করে। আমাদের সভ্যতার বিভিন্ন উপকরণ যেমন-সুউচ্চ দালান, সৌখিন আসবাবপত্র, উন্নত যন্ত্রপাতিসহ প্রাত্যহিক জীবনে ব্যবহৃত কম্পিউটার, মোবাইল, বিদ্যুৎ, বিমান-গাড়ি-জাহাজ ইত্যাদি বিভিন্ন প্রযুক্তি মূলে রয়েছে পদার্থবিজ্ঞান। এই মহাবিশ্ব যেমন প্রতিমুহূর্তে প্রসারিত হচ্ছে, তেমনি দিনে দিনে পদার্থবিজ্ঞানের পরিসরও বিস্তৃত হচ্ছে। পদার্থবিজ্ঞানের এই বিশাল পরিসরকে চিরায়ত পদার্থবিজ্ঞান বা ক্লাসিক্যাল ফিজিক্স ও আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান বা মডার্ন ফিজিক্স দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
- চিরায়ত পদার্থবিজ্ঞান
- পদার্থের পরিমাপ ও বিভিন্ন রাশি
Measurement of Substances and Different Quantities
- পরিমাপের আদর্শ একক
- মৌলিক রাশি ও মৌলিক একক
- যৌগিক রাশি ও যৌগিক একক
যৌগিক রাশি: যে সকল রাশি মৌলিক রাশির উপর নির্ভরশীল বা মৌলিক রাশি থেকে লাভ করা যায় সেগুলোকে যৌগিক রাশি বলে।অসংখ্য যৌগিক রাশি রয়েছে। এসব যৌগিক রাশির একক ও মাত্রা সূত্রের সাহায্যে বের করা যেতে পারে।
লব্ধ একক: যৌগিক রাশির একককে যৌগিক বা লব্ধ একক বলে। যেমন: বলের একক kg m s−2 বা N (নিউটন)।
কিছু যৌগিক রাশি ও তাদের পরিচিতিযৌগিক রাশি প্রতীক একক মাত্রা বেগ - Velocity →v মিটার/সেকেন্ড m s−1 [LT−1] ত্বরণ - Acceleration →a মিটার/সেকেন্ড2 m s−2 [LT−2] বল - Force →F নিউটন N বা kg m s−2 [MLT−2] কাজ - Work, শক্তি - Energy W, E জুল J বা N m [ML2T−2] তাপশক্তি - Heat H বা Q জুল J বা N m [ML2T−2] ক্ষমতা - Power P ওয়াট W বা J s−1 [ML2T−3] চাপ - Pressure P প্যাসকেল Pa বা N m−2 [ML−1T−2] এরূপ অসংখ্য যৌগিক রাশি রয়েছে ...
প্রশ্ন: ‘বল’ একটি লব্ধ রাশি। - কেন? ✪ ✪ ✪
আমরা জানি, F=ma। অর্থাৎ -
বল = ভর × ত্বরণ
= ভর × বেগ সময়
= ভর সময় × সরণ সময়
= ভর × দৈর্ঘ্য সময় ২
সমীকরণ হতে দেখা যায় যে, বল স্বাধীন বা নিরপেক্ষ নয়। বল প্রকাশের জন্যে ভর, দৈর্ঘ্য ও সময় তিনটি মৌলিক রাশির প্রয়োজন হয়। তাই বল একটি লব্ধ বা যৌগিক রাশি।
প্রশ্ন: মৌলিক রাশি ও যৌগিক রাশির মধ্যে পার্থক্য লিখো।
মৌলিক রাশি ও যৌগিক রাশির মধ্যে পার্থক্যমৌলিক রাশি যৌগিক রাশি যে সকল রাশি অন্য রাশির উপর নির্ভর করে না বরং অন্য রাশি এসব রাশির উপর নির্ভর করে সেগুলোকে মৌলিক রাশি বলে। যে সকল রাশি মৌলিক রাশির উপর নির্ভরশীল বা মৌলিক রাশি থেকে লাভ করা যায় সেগুলোকে যৌগিক রাশি বা লব্ধ রাশি বলে। এরা স্বাধীন বা নিরপেক্ষ বা অনির্ভরশীল। লব্ধ রাশি স্বাধীন নয় বরং নির্ভরশীল। মৌলিক রাশির সংখ্যা ৭ টি। যৌগিক রাশি অসংখ্য। দৈর্ঘ্য, ভর, সময়, তাপমাত্রা, তড়িৎ প্রবাহ, দীপন তীব্রতা ও পদার্থের পরিমাণ। সরণ, ত্বরণ, বেগ, ভরবেগ, মন্দন, বল, কাজ, ক্ষমতা, শক্তি, চাপ, তাপ, ঘনত্ব, ক্ষেত্রফল, আয়তন, আপেক্ষক তাপ ইত্যাদি লব্ধ রাশির উদাহরণ। এরূপ অসংখ্য যৌগিক রাশি রয়েছে ...
SI একক: পরিমাপের আন্তর্জাতিক পদ্ধতিকে ফরাসি ভাষায় Systeme International d’ Unites বা SI একক বলে।
প্রশ্ন: এককের SI পদ্ধতি বলতে কী বোঝ? ✪
উত্তর: পূর্বে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে ভিন্ন ভিন্ন একক চালু ছিল। সারা বিশ্বে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারের কারণে একই রকম এককের প্রয়োজন হয়। তাই ১৯৬০ সাল থেকে সারা বিশ্বে বিভিন্ন
রাশির একই রকম আদর্শ একক চালু করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিশ্ব জোড়া চালু হওয়া পরিমাপের এই আন্তর্জাতিক পদ্ধতিকে ফরাসি ভাষায় Systeme International d’Unites বা সংক্ষেপে এককের SI পদ্ধতি বলে।রাশি: এই ভৌত জগতে যা কিছু পরিমাপ করা যায় তাকে রাশি বলে। যেমন: দৈর্ঘ্য, ভর, সময়, কাজ।
মৌলিক রাশি: যে সকল রাশি স্বাধীন বা নিরপেক্ষ, যেগুলো অন্য রাশির উপর নির্ভর করে না বরং অন্য রাশি এসব রাশির উপর নির্ভর করে সেগুলোকে মৌলিক রাশি বলে। মৌলিক রাশি ৭টি। ✪
মৌলিক একক: মৌলিক রাশির একককে মৌলিক একক বলে। যেমন- ভরের একক কিলোগ্রাম বা সংক্ষেপে kg.
মৌলিক রাশিসমূহ ও তাদের পরিচিতিSl. মৌলিক রাশিসমূহ প্রতীক একক মাত্রা দৈর্ঘ্য - Length l মিটার m [L] ভর - Mass m কিলোগ্রাম kg [M] সময় - Time t সেকেন্ড s [T] তাপমাত্রা - Temperature T,θ কেলভিন K [Θ] বিদ্যুৎ প্রবাহ - Electric Current I অ্যাম্পিয়ার A [I] দীপন তীব্রতা - Luminous Intensity Iv ক্যান্ডেলা Cd [L] পদার্থের পরিমাণ - Amount of Substance n মোল mol [N] Θ (থিটা): বড় হাতের গ্রিক অক্ষর থিটা এবং θ (থিটা): ছোট হাতের গ্রিক অক্ষর থিটা
১ মিটার: শূন্য স্থানে আলো ১ সেকেন্ড এর ২৯৯ ৭৯২ ৪৫৮ ভাগের ১ ভাগ সময়ে যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে ১ মিটার বলে।
১ কেজি: ফ্রান্সের নির্দিষ্ট ভবনে রাখা প্লাটিনাম ও ইরিডিয়াম দিয়ে তৈরি 3.9 cm উচ্চতা ও ব্যাসের ভরকে ১ কেজি বলে।
১ সেকেন্ড: সিজিয়াম-133 (13355Cs) পরমাণুর 9,192,631,770 টি স্পন্দন সম্পন্ন করতে যে পরিমাণ সময় লাগে তাকে ১ সেকেন্ড বলে।
১ কেলভিন: পানির ত্রৈধ বিন্দুর তাপমাত্রার ২৭৩.১৫ ভাগের ১ ভাগকে ১ কেলভিন বলে।
১ অ্যাম্পিয়ার: অসীম দৈর্ঘ্য ও বৃত্তাকার প্রস্থচ্ছেদের দুটি তার 1 m দূরে রেখে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ প্রবাহিত করলে তারা পরস্পরকে 2×10−7 N বলে আকর্ষণ করে তাকে ১ অ্যাম্পিয়ার বলে।
১ ক্যান্ডেলা: প্রতি সেকেন্ডে 540×1012 বার কম্পনরত কোনো আলোর উৎস থেকে এক স্টেরিডিয়ান ঘনকোণে এক ওয়াটের 683 ভাগের ১ ভাগ দীপন তীব্রতার আলোকে ১ ক্যান্ডেলা বলে।
১ মোল: 0.012 kg কার্বনে যতগুলো কার্বন পরমাণু থাকে সেই সংখ্যক অণু, পরমাণু, আয়ন বিদ্যমান পদার্থের পরিমাণকে ১ মোল বলে।
- এককের গুণিতক ও উপগুণিতক
উপসর্গ: যে বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি কোনো শব্দের পূর্বে বসে তার অর্থ পরিবর্তন করে তাকে উপসর্গ বলে। যেমন - গ্রাম শব্দের পূর্বে কিলো (অর্থ - হাজারগুণ) উপসর্গটি বসানো হলে কিলোগ্রাম শব্দটি গঠিত হয় এবং তা গ্রামের হাজারগুণ পরিমাণ বুঝায়।
গুণিতক: কোনো সংখ্যাকে যেকোনো সংখ্যা দ্বারা গুণ করলে যে সংখ্যা পাওয়া যায় তাকে গুণিতক বলে। যেমন - ৫ কে ১০ দ্বারা গুণ করলে ৫০ পাওয়া যায় যা ৫ এর একটি গুণিতক। সংখ্যাটি ১০ এরও একটি গুণিতক।
উপগুণিতক: কোনো সংখ্যাকে যেকোনো সংখ্যা দ্বারা গুণ করলে যে ভগ্নাংশ সংখ্যা পাওয়া যায় তাকে উপগুণিতক বলে। যেমন - ৫ কে ১/১০ দ্বারা গুণ করলে ০.৫ বা ১/২ পাওয়া যায় যা ৫ এর একটি উপগুণিতক।
প্রশ্ন: এককের গুণিতক ও উপগুণিতক ব্যবহার করা প্রয়োজন কেন?
অনেক বড় ও অনেক ছোট বস্তুর পরিমাপের ক্ষেত্রে একই ধরনের একক সংখ্যা ব্যবহার করা বুদ্ভিমানের কাজ নয়। তা্ই আন্তর্জাতিকভাবে সীকৃত এককের কিছু SI গুণিকতক ব্যবহার করা হয়। গুণিতকগুলো ব্যবহার করে সহজেই অনেক বড় কিংবা ছোট সংখ্যাকে বোঝানো যায়। যেমন - ১০০০ গ্রাম কে ১ কিলোগ্রাম বলা কিংবা ১/১০০ মিটার কে ১ সেন্টিমিটার বলা বাস্তবসম্মত।
SI সীকৃত কিছু গুণিতকউপসর্গের নাম প্রতীক গাণিতিক প্রকাশ ইংরেজি প্রতিশব্দ বাংলা কথায় এক্সা E 1018 quintillion উপরের বড় কোনো এককে রূপান্তর করতে ভাগ করতে হয়।
⇧পেটা P 1015 quadrillion টেরা T 1012 trillion গিগা G 109 billion একশ কোটি মেগা M 106 million দশ লক্ষ কিলো k 103 thousand হাজার হেক্টো h 102 hundred শতক ডেকা da 101 ten দশক 100 বা 1 একক ডেসি d 10−1 tenth দশমাংশ সেন্টি c 10−2 hundredth শতাংশ মিলি m 10−3 thousandth সহস্রাংশ মাইক্রো μ 10−6 millionth ⇩
নীচের ছোট এককে রূপান্তর করতে গুণ করতে হয়।ন্যানো n 10−9 billionth পিকো p 10−12 trillionth ফেমটো f 10−15 quadrillionth এটো a 10−18 quintillionth - রাশির মাত্রা ও মাত্রার ব্যবহার
- মৌলিক রাশি ও মৌলিক একক
মাত্রা: কোনো ভৌত রাশিতে উপস্থিত মৌলিক রাশিগুলোর সূচককে মাত্রা বলে। যেমন: বলের মাত্রা [F]=MLT−2.✪✪✪
প্রশ্ন: ‘বল’ এর মাত্রা বের করো।
আমরা জানি, W=Fs। অর্থাৎ -
[F]=[m]×[a]
=[M]×[LT−2]
=[MLT−2]
এভাবে যেকোনো লব্দ রাশির মাত্রা বের করা যায়।
প্রশ্ন: ‘কাজ’ এর মাত্রা বের করো।
আমরা জানি, W=Fs। অর্থাৎ -
[W]=[F]×[s]
=[MLT−2]×[L]
=[ML2T−2]
এভাবে যেকোনো লব্দ রাশির মাত্রা বের করা যায়।
প্রশ্ন: মাত্রার সাহায্যে s=ut+12at2 সমীকরণটির সত্যতা যাচাই করো।
আমরা জানি, কেবলমাত্র একই জাতীয় রাশির যোগ-বিয়োগ বা সমতা সম্ভব। সুতরাং প্রদত্ত সমীকরণটি সত্য হবে যদি এবং কেবল যদি সমীকরণটির প্রতিটি পদ একই জাতীয় এবং প্রতিটি পদের মাত্রা একই হয়।
এখানে, উপরিউক্ত সমীকরণের বামদিকে ১টি ও ডানদিকের ২টি পদ আছে।
বামপাশের একমাত্র পদের রাশিটি হচ্ছে সরণ s যার মাত্রা L।
ডানদিকের ১ম পদটিতে, u রাশিটি হচ্ছে আদিবেগ যার মাত্রা LT−1 এবং t রাশিটি সময় যার মাত্রা T।
∴ ut পদটির মাত্রা LT−1×T=L
ডানদিকের ২য় পদটিতে, a রাশিটি হচ্ছে ত্বরণ যার মাত্রা LT−2 এবং t2 রাশিটি সময় যার মাত্রা T2।
∴ 12at2 পদটির মাত্রা LT−2×T2=L
দেখা যাচ্ছে যে, সমীকরণটির বামপাশের রাশিটির মাত্রা L এবং ডানপাশের দুটি পদের মাত্রাও L। সুতরাং, সমীকরণটি সীদ্ধ।
- বৈজ্ঞানিক প্রতীক-সংকেত
উপসর্গ:
পরিমাপ: কোনো কিছুর পরিমাণ নির্ণয় করাকে পরিমাপ বলে। যেমন: কোনো টেবিলের দৈর্ঘ্য দুই হাত অথবা এক গজ অথবা ৩ ফুট।
পরিমাপের একক: যে আদর্শ পরিমাণের সাথে তুলনা করে ভৌত রাশিকে পরিমাপ করা হয় তাকে পরিমাপের একক বলে। ✪✪
- পরিমাপের আদর্শ একক
- পরিমাপক যন্ত্রপাতির ব্যবহার
Measuring Instruments
- মিটার স্কেল
পদার্থবিজ্ঞানের মূল উদ্দেশ্য প্রকৃতির রহস্যকে জানা। প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন প্রাকৃতিক ঘটনা যেমন- লোড স্টেনের লোহাকে আকর্ষণ, উপরের দিকে নিক্ষিপ্ত বস্তুর ফিরে আসা, মৃত সাগরে মানুষের ভেসে থাকা, জ্বরের সময় রোগীর ঠাণ্ডা লাগা, আকাশ নীল দেখানো, শব্দের প্রতিধ্বনি, আকাশে বিজলী চমকানো ইত্যাদি ঘটনা কেন ঘটে, এসব প্রাকৃতিক ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা পদার্থবিজ্ঞানের মূল উদ্দেশ্য।
- স্লাইড ক্যালিপার্স
প্রাকৃতিক ঘটনার রহস্য উদঘাটন হওয়ার পর ঘটনাটি কীভাবে ঘটছে তা পর্যবেক্ষন করে তা নিয়ম বা সূত্রের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধামে সেই ঘটনা প্রমাণ করা পদার্থবিজ্ঞানের দ্বিতীয় অন্যতম উদ্দেশ্য।
- স্ক্রু গজ
পদার্থবিজ্ঞানের তৃতীয় ও চুড়ান্ত উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রাকৃতিক ঘটনার নিয়ম বা সূত্রকে কাজে লাগিয়ে মানব কল্যানকর প্রযুক্তির বিকাশ সাধন।
- নির্ভুলতা ও ত্রুটি
পদার্থবিজ্ঞানের তৃতীয় ও চুড়ান্ত উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রাকৃতিক ঘটনার নিয়ম বা সূত্রকে কাজে লাগিয়ে মানব কল্যানকর প্রযুক্তির বিকাশ সাধন।
- মিটার স্কেল
- গাণিতিক গণনা
Mathematical Calculations
- স্কেলার ও ভেক্টর
পদার্থবিজ্ঞানের মূল উদ্দেশ্য প্রকৃতির রহস্যকে জানা। প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন প্রাকৃতিক ঘটনা যেমন- লোড স্টেনের লোহাকে আকর্ষণ, উপরের দিকে নিক্ষিপ্ত বস্তুর ফিরে আসা, মৃত সাগরে মানুষের ভেসে থাকা, জ্বরের সময় রোগীর ঠাণ্ডা লাগা, আকাশ নীল দেখানো, শব্দের প্রতিধ্বনি, আকাশে বিজলী চমকানো ইত্যাদি ঘটনা কেন ঘটে, এসব প্রাকৃতিক ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা পদার্থবিজ্ঞানের মূল উদ্দেশ্য।
- ক্যালকুলাস
প্রাকৃতিক ঘটনার রহস্য উদঘাটন হওয়ার পর ঘটনাটি কীভাবে ঘটছে তা পর্যবেক্ষন করে তা নিয়ম বা সূত্রের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধামে সেই ঘটনা প্রমাণ করা পদার্থবিজ্ঞানের দ্বিতীয় অন্যতম উদ্দেশ্য।
- ডাইভারজেন্স
পদার্থবিজ্ঞানের তৃতীয় ও চুড়ান্ত উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রাকৃতিক ঘটনার নিয়ম বা সূত্রকে কাজে লাগিয়ে মানব কল্যানকর প্রযুক্তির বিকাশ সাধন।
- কার্ল
পদার্থবিজ্ঞানের তৃতীয় ও চুড়ান্ত উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রাকৃতিক ঘটনার নিয়ম বা সূত্রকে কাজে লাগিয়ে মানব কল্যানকর প্রযুক্তির বিকাশ সাধন।
- টেন্সর
পদার্থবিজ্ঞানের তৃতীয় ও চুড়ান্ত উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রাকৃতিক ঘটনার নিয়ম বা সূত্রকে কাজে লাগিয়ে মানব কল্যানকর প্রযুক্তির বিকাশ সাধন।
- স্কেলার ও ভেক্টর
গাণিতিক অংশ
- ভার্নিয়ার ধ্রুবক
- ভার্নিয়ার স্কেলের 50 ঘর সমান প্রধান স্কেলের 49 ঘর। প্রধান স্কেলের ক্ষুদ্রতম 1 ঘর =1 mm হলে, ভার্নিয়ার ধ্রুবক কত?
সমাধান: দেওয়া আছে, প্রধান স্কেলের ক্ষুদ্রতম 1 ঘর =1 mm
এবং প্রধান স্কেলের ক্ষুদ্রতম 50 ঘর ভার্নিয়ার স্কেলের 40 ঘর বা 1 mm
∴ প্রধান স্কেলের ক্ষুদ্রতম 1 ঘর ভার্নিয়ার স্কেলের 4050 mm
আমরা জানি, প্রধান স্কেলের ক্ষুদ্রতম ১ ভাগের চেয়ে ভার্নিয়ার স্কেলের ১ ভাগ যত ছোট তার পরিমাণকে ভার্নিয়ার ধ্রুবক বলে।
অর্থাৎ, ভার্নিয়ার ধ্রুবক = (মূল স্কেলের ক্ষুদ্রতম ১ ঘরের মান − ভার্নিয়ার স্কেলের ক্ষুদ্রতম ১ ঘরের মান)
=(1−4950)=(50−4950)=0.02 mm (Answer) - একটি স্লাইড ক্যালিপার্সের ভার্নিয়ার স্কেলের ভাগ সংখ্যা 20 । প্রধান স্কেলের ক্ষুদ্রতম ভাগের মান 1 mm হলে ভার্নিয়ার ধ্রুবক কত?
সমাধান:
এখানে,
ভার্নিয়ার স্কেলের ভাগ সংখ্যা, N=20
প্রধান স্কেলের ক্ষুদ্রতম ১ ভাগের মান, s=1 mm
ভার্নিয়ার ধ্রুবক, V.C=?
আমরা জানি,
V.C=sN=120=0.05 mm (Answer) - কোনো স্লাইড ক্যালিপার্সে ভার্নিয়ার ধ্রুবকের মান 0.005 সে.মি. হলে ভার্নিয়ার স্কেলের ভাগ সংখ্যা কত?
সমাধান:
এখানে, ভার্নিয়ার ধ্রুবক, V.C=0.005 cm=0.005×10 mm=0.05 mm
প্রধান স্কেলের ক্ষুদ্রতম ১ ভাগের মান, s=1 mmআমরা জানি
V.C=sN⇒0.05=1N⇒0.05n=1∴n=20 (Answer)
- ভার্নিয়ার স্কেলের 50 ঘর সমান প্রধান স্কেলের 49 ঘর। প্রধান স্কেলের ক্ষুদ্রতম 1 ঘর =1 mm হলে, ভার্নিয়ার ধ্রুবক কত?
- ভার্নিয়ার স্কেলের ব্যবহার
- একটি দণ্ডকে স্লাইড ক্যালিপার্সের দুই চোয়ালের মাঝে স্থাপনের পর যে পাঠ পাওয়া গেল তা হচ্ছে - প্রধান স্কেলের পাঠ 4 cm, ভার্নিয়ার স্কেল সমপাতন 7 এবং ভার্নিয়ার ধ্রুবক 0.1 mm. দণ্ডটির দৈর্ঘ্য কত?
সমাধান:
এখানে, প্রধান স্কেলের পাঠ, M=4 cm
ভার্নিয়ার সমপাতন, V=7
ভার্নিয়ার ধ্রুবক, V.C=0.1 mm=0.110 cm=0.01 cm
দণ্ডের দৈর্ঘ্য, L=?আমরা জানি
L=M+V×V.C=(4+7×0.01)=(4+0.07)=4.07 cm (Answer)
- মূল স্কেল ও ভার্নিয়ার স্কেলের সমন্বিত ব্যবহারে নিট পাঠ পাওয়া গেল 12.66 cm। ভার্নিয়ার সমপাতন 6 হলে ভার্নিয়ার ধ্রুবক কত মিলিমিটার? (দেয়া আছে প্রধান স্কেলের পাঠ 12.6 cm)।
সমাধান:
এখানে, দণ্ডের দৈর্ঘ্য, L=12.66 cm
প্রধান স্কেলের পাঠ, M=12.6 cm
ভার্নিয়ার সমপাতন, V=6
ভার্নিয়ার ধ্রুবক, VC=?
আমরা জানি
L=M+V×VC⇒12.66=12.6+6×VC⇒12.66−12.6=6VC⇒6VC=0.06⇒VC=0.01 cm⇒VC=0.01×10 mm∴VC=0.1 mm (Answer) - স্লাইড ক্যালিপার্সের ভার্নিয়ার ধ্রুবক 0.01 cm। উক্ত স্লাইড ক্যালিপার্স দিয়ে একটি গোলকের ব্যাস পরিমাপ করা হলো, যার মূল স্কেলের পাঠ 12.2 cm; ভার্নিয়ার সমপাতন 5; যন্ত্রটির যান্ত্রিক ত্রুটি নেই; উক্ত গোলকের ভর 1 kg। আয়তন ও ঘনত্ব নির্ণয় কর।
সমাধান:
এখানে, প্রধান স্কেলের পাঠ, M=12.2 cm
ভার্নিয়ার সমপাতন, V=5
ভার্নিয়ার ধ্রুবক, VC=0.01 cm
গোলকের ব্যাস, d=M+V×VC=(12.2+5×0.01)=12.24 cm
গোলকের ব্যাসার্ধ, r=d2=12.252=6.125 cm=6.125×10−2 m
গোলকের ভর, m=1 kg
গোলকের আয়তন, V=?
গোলকের ঘনত্ব, ρ=?আমরা জানি,
V=43πr3=43×3.1416×(6.125×10−2)3=9.6252×10−4 m3(Answer)
আবার,
ρ=mV=19.6252×10−4=1038.94 kg m−3 (Answer)
- একটি দণ্ডকে স্লাইড ক্যালিপার্সের দুই চোয়ালের মাঝে স্থাপনের পর যে পাঠ পাওয়া গেল তা হচ্ছে - প্রধান স্কেলের পাঠ 4 cm, ভার্নিয়ার স্কেল সমপাতন 7 এবং ভার্নিয়ার ধ্রুবক 0.1 mm. দণ্ডটির দৈর্ঘ্য কত?
- চিত্রভিত্তিক পরিমাপ
- ঘনক, বেলন ও গোলক আকৃতির বস্তুগুলোর আয়তনের তুলনা কর।
সমাধান:
এখানে, ঘনকের প্রতিটি বাহুর দৈর্ঘ্য, l=5.4 cm
ঘনকের আয়তন, V=?আমরা জানি,
V=l3=5.43=157.464 cm3(Answer)এখানে, গোলকের ব্যাসার্ধ, r=5.4 cm
ঘনকের আয়তন, V=?গোলকের ক্ষেত্রে,
V=43πr3=43×3.1416×2.73=61.836 cm3(Answer)এখানে, সিলিন্ডারের ব্যাসার্ধ, r=2.7 cm
সিলিন্ডারের উচ্চতা, h=5.4 cm
সিলিন্ডারের আয়তন, V=?সিলিন্ডারের ক্ষেত্রে,
V=πr2h=3.1416×2.72×5.4=123.672 cm3(Answer)ঘনক, গোলক ও সিলিণ্ডারের আয়তনের অনুপাত =157.464:61.836:123.672=2.55:1:2(Answer)
- ভার্নিয়ার স্কেলটির ভার্নিয়ার ধ্রুবক ও ভার্নিয়ার সমপাতন নির্ণয় করে দেখাও যে, মূল স্কেলের শূন্য দাগ হতে ভার্নিয়ার স্কেলটি 1.03 সে.মি. সরানো হয়েছে।
সমাধান:
চিত্র অনুসারে, প্রধান স্কেলের পাঠ, M=1 cm
ভার্নিয়ার সমপাতন, V=3
ভার্নিয়ার ধ্রুবক, VC=sN=110 mm=0.1 mm=0.01 cm
দণ্ডের দৈর্ঘ্য, L=?আমরা জানি
L=M+V×VC=(1+3×0.01)=(1+0.03)=1.03 cm
অতএব, ভার্নিয়ার স্কেলটি মূল স্কেলের শূন্য দাগ হতে 1.03 cm সরানো হয়েছে।
- ঘনক, বেলন ও গোলক আকৃতির বস্তুগুলোর আয়তনের তুলনা কর।
- পরিমাপের নির্ভুলতা ও ত্রুটি নির্ণয়
- শুধু cm - এ দাগ কাটা আছে এমন একটি রুলার দিয়ে একটি আয়তাকার ঘনবস্তুরদৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা যথাক্রমে 10 cm, 5 cm ও 4 cm পাওয়া গেল।
সমাধান:
এখানে, আয়তাকার ঘনবস্তুর -
দৈর্ঘ্য, l=10 cm
প্রস্থ, b=5 cm
উচ্চতা, h=4 cm
∴ বস্তুটির আপাত আয়তন, V=l×b×h=10×5×4=200 cm3
যেহেতু রুলারে শুধু cm এ দাগ কাটা আছে তাই ত্রুটি হবে ±0.5 cm।
∴ সম্ভাব্য ছোট আয়তন, Vmin=(10−0.5)×(5−0.5)×(4−0.5)=9.5×4.5×3.5=149.625 cm3
∴ সম্ভাব্য বড় আয়তন,Vmax=(10+0.5)×(5+0.5)×(4+0.5)=10.5×5.5×4.5=259.875 cm3
ধনাত্মক ত্রুটি, |200−149.625|=50.375 cm3
ঋনাত্মক ত্রুটি, |200−259.875|=59.875 cm3
তুলনামূলক বড়টি বিবেচনায়, চূড়ান্ত ত্রুটি 59.875 cm3।
অতএব,আপেক্ষিক ত্রুটি = চূড়ান্ত ত্রুটির মান পরিমাপকৃত মান ×100%
=59.875200×100%=20.735%≈30% (Answer) - একটি ঘনক আকৃতির বস্তুর দৈর্ঘ্য 10 cm এবং দৈর্ঘ্য পরিমাপে 10 আপেক্ষিক ত্রুটি আছে। ঘনকটির একটি পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল ও আয়তন পরিমাপে আপেক্ষিক ত্রুটির পরিমাণ নির্ণয় করো।
সমাধান:
এখানে, ঘনবস্তুটির দৈর্ঘ্য, l=10 cm
∴ বস্তুটির আপাত ক্ষেত্রফল, A=l2=102=100 cm2
যেহেতু দৈর্ঘ্য পরিমাপে 10% ত্রুটি আছে। তাই,
∴ সম্ভাব্য দৈর্ঘ্য, l=(10±10×10%)=10±10×10100=10±1 cm2
∴ সম্ভাব্য বড় ক্ষেত্রফল,Amax=(10+1)2=121cm2
∴ সম্ভাব্য ছোট ক্ষেত্রফল,Amin=(10−1)2=81cm2
ধনাত্মক ত্রুটি, |100−81|=19 cm2
ঋনাত্মক ত্রুটি, |100−121|=21 cm2
তুলনামূলক বড়টি বিবেচনায়, চূড়ান্ত ত্রুটি 21 cm2।
অতএব,আপেক্ষিক ত্রুটি = চূড়ান্ত ত্রুটির মান পরিমাপকৃত মান ×100%
=21100×100%≈21% (Answer)
অর্থাৎ দৈর্ঘ্য পরিমাপে 10% ত্রুটি থাকলে তার ক্ষেত্রফল প্রায় দ্বিগুণ ত্রুটিপূর্ণ হয়। অনুরূপভাবে দেখানো যায় যে, দৈর্ঘ্য পরিমাপে 10% ত্রুটি থাকলে তার আয়তন তিনগুণ ত্রুটিপূর্ণ হয়।
- শুধু cm - এ দাগ কাটা আছে এমন একটি রুলার দিয়ে একটি আয়তাকার ঘনবস্তুরদৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা যথাক্রমে 10 cm, 5 cm ও 4 cm পাওয়া গেল।
- স্ক্রু গজ - এর ন্যুনাঙ্ক ও তারের ব্যাস নির্ণয়
- একটি স্ক্রু-গজের বৃত্তাকার স্কেলটি সম্পূর্ণ ২ বার ঘুরালে এটি রৈখিক স্কেল বরাবর 1 mm সরে যায়। এর বৃত্তাকার স্কেলের ভাগ সংখ্যা 50। এটির পীচ ও লঘিষ্ট গণন বা ন্যূনাঙ্ক কত?
সমাধান: দেওয়া আছে,
বৃত্তাকার স্কেলটি সম্পূর্ণ ২ বার ঘুরালে রৈখিক স্কেল বরাবর সরে যায় 1 mm
∴ বৃত্তাকার স্কেলটি সম্পূর্ণ ১ বার ঘুরালে রৈখিক স্কেল বরাবর সরে যায় 12 mm বা o.5 mm
আমরা জানি, স্ক্রু গজের বৃত্তাকার স্কেল একবার সম্পূর্ণ ঘুরালে এটি রৈখিক স্কেল বরাবর যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে স্ক্রুর পিচ বলে। অর্থাৎ স্ক্রুটির পীচ 0.5 mm।
আবার, লঘিষ্ট গণন বা ন্যূনাঙ্ক = পীচ বৃত্তাকার স্কেলের ভাগসংখ্যা
=0.550=0.01 mm (Answer) - রৈখিক স্কেলের পাঠ 4 mm এবং বৃত্তাকার স্কেলের দাগ নং 50 হলে তারের ব্যাস কত mm? (লঘিষ্ঠ গণন 0.01 mm)
সমাধান:
এখানে, রৈখিক স্কেলের পাঠ, M=4 mm
লঘিষ্ট গুণন, LC=0.01 mm
বৃত্তাকার স্কেলের সমপাতন, L=50
তারের ব্যাস, d=?
আমরা জানি,
d=M+L×LC=4+50×0.01=4+0.5=4.5 mm (Answer) - রৈখিক স্কেলের পাঠ 4 mm এবং বৃত্তাকার স্কেলে পাঠের মান 0.17 mm তারের ব্যাস কত?
সমাধান:
এখানে, রৈখিক স্কেলের পাঠ, M=4 mm
বৃত্তাকার স্কেলের পাঠ, L×LC=0.17 mm
তারের ব্যাস, d=?
আমরা জানি,
d=M+L×LC=(4+0.17)=4.17 mm (Answer)
- একটি স্ক্রু-গজের বৃত্তাকার স্কেলটি সম্পূর্ণ ২ বার ঘুরালে এটি রৈখিক স্কেল বরাবর 1 mm সরে যায়। এর বৃত্তাকার স্কেলের ভাগ সংখ্যা 50। এটির পীচ ও লঘিষ্ট গণন বা ন্যূনাঙ্ক কত?
অনুশীলন
- সংজ্ঞায়িত করি
- পদার্থবিজ্ঞান বিজ্ঞানের যে শাখায় ...
- সংক্ষিপ্ত উত্তর দিন।
- SI একক বলতে কী বোঝ?
- গাণিতিক সমস্যাগুলি সমাধান করুন।
- দুতিকাক
- ব্যাখ্যামূলক উত্তর দিন
- alkdsjflkasdjfkl
Hello, Physics
উত্তরমুছুন